Sunday, August 18, 2024

কবি ও গদ্যকার দেবজ্যোতি রায় এবং অধমের অক্ষমতা

কবি ও গদ্যকার দেবজ্যোতি রায় প্রয়াত 😥

কবি ও গদ্যকার দেবজ্যোতি রায় এবং এ অধম


জীবনে কত কিছু শুধু ভেবেছি। করি করি করে ফেলে রেখেছি, করা হয়নি। করতে গিয়ে পেরে উঠিনি বলে হাল ছেড়ে দিয়েছি হতাশায়। এদিকে সময় তার নিজের গতিতে আমার চারপাশটাকে দুমড়ে দিয়ে চলছে নিত্য। বেশিরভাগ সময় যা আমায় ছুঁতে পারে না। নিজেকে মনে হয় মাঝেমাঝে বোধহীন। যদিও জানি বোধের থাকা না থাকায় বয়সের চলা থামে না, ব্যক্তিগত মৃত্যু ঠিকই আসে, কখন দুম করে।...দেবজ্যোতি রায়, কিছু কাজ ছিল করার, চিরকালের জন্য বাকিই থেকে গেলো আমার। খুব অল্প সান্নিধ্য, সেটুকুই স্মৃতি, যতক্ষণ আমি।


অধমের অক্ষমতা...

বার কয়েক দেখা হয়েছিল। আমার লেখাকে পছন্দ করতেন প্রকাশ্যেই বলতেন এবং আমাকেও হয়তো পছন্দ করতেন ব্যক্তি মানুষ হিসাবে। শেষ দু'বছর ফেসবুকে আমি নেই। এবং হোয়াটসঅ্যাপে টুকটাক থাকি বাধ্য হয়েই, কর্মসূত্রে। লেখালেখির জগতের দু'চারজনের সঙ্গে  হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস ধরে যা-যেটুকু কথাবার্তা হয় নইলে যোগাযোগ বিছিন্ন লেখার জগত থেকে। এমন হনুও নই যে অন্যেরা হত্যে দিয়ে এসে খোঁজখবর নেবে। নিজেও খোলসে ঢুকে থাকায় যে দু'একজনের সঙ্গে কথাবলার ইচ্ছে থাকে তাও আর হয় না। এ কারণেই দেবজ্যোতি রায়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন মোলাকাত বা কথাবার্তা নেই। অথচ কাল গল্পকার প্রলয় নাগের স্ট্যাটাস সূত্রে জানলাম তিনি অসুস্থ। আজ দুপুরে আরেকজনের স্ট্যাটাস দেখে বুঝলাম তিনি প্রয়াত! তারপরই একটু খোঁজ নিতে গিয়ে জানলাম অনেকদিনই তিনি অসুস্থ। অথচ আজকেই সকালে ভাবছিলাম অনেক দিন তো বেরোই না আজকে একবার বেরিয়ে পড়ি ওদিকটায়, তারপর তো এতকিছু...  আমার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'ব্লিডিং বরষে হৃদি'র একটা ভূমিকা/মুখবন্ধ লেখার কথা ছিল সেই করোনাকালে কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি পরে সেটা ছাড়াই বই বেরল, বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে অবশ্য তিনি ছিলেন আলিপুরদুয়ারে প্রকাশক শাঙ্খিক আয়োজিত অনুষ্ঠানে এবং ছোট্ট একটা বক্তৃতা  ছিল তাঁর।


মনে মনে ভেবেছিলাম আগামী গদ্যের বইটায় (যদি প্রকাশের আলো দেখে আর কি!) না-হওয়া কাজটা হবে। কিন্তু সে আর হবে না চিরকালের মতো।


তাঁকে নিয়ে একটা বিশেষ সংখ্যা করার পরিকল্পনা ছিল আমার পত্রিকা ইবলিশের তরফে নাহ্‌ সেও হলো না। এগুলো আমার একেকটা চরম অপারগতা, বড়ো ব্যর্থতা। 


১৮.০৮.২০২৪ | রাহেবুল |

Monday, February 26, 2024

কবিতা ব্লেডজ কুসুম - রাহেবুল





এইভাবে / এই ভবে / ব্ল্যার / ব্লেডজ কুসুম   -  রাহেবুল   ('ব্লিডিং বরষে হৃদি' কাব্যের একটি কবিতা)

                                                          

নিয়মিত সে জিজ্ঞেস করে একটা কথা, একটা সময়ে। খবরাখবর নেয়ার স্বেচ্ছা ইচ্ছে হয়তো-বা। 

খবররা পায় কি সে?

জিজ্ঞেস করে—

ঘুম হয়েছে?

না।

ঘুম হয়েছে?

না।

ঘুম হয়েছে কাল?

না।

ঘুমিয়েছ কাল?

ততটা ভালো নয়।

ঘুম হয়েছিল?

না।


****


বলে—

পাগলাগারদে কবে যাবি?


****


কোনোদিন গা গরম, গায়ে জ্বর। বা রাত্তিরে।


অথবা 


কোনোরাত নিদ্রাহীন, ঘুম নেই।

কোনোরাত সর্দি-হাঁচি-সিঙ্গন, নাক বন্ধ 


অথবা 


সাদা পরির সম্মোহন 


অথবা 


সেক্সচ্যাট


অথবা


ব্লেডজ মায়া 


****


পাগলাগারদে যাইনি অদ্য অবধি। তার এসএমএস নাকি মেসেজ নিয়মিত আসে আজও। 


আজও সে অনিশ্চিন্তপুরে ডি। 

এইভাবে সময় গড়ায়। সময় কী? 

সে কে?

কে সে?


দু হাতে দড়ি বেঁধে, কোমরে বেঁধে, দু পায়ে বেঁধে, কাকে বেঁধেছ হে বটবৃক্ষ?

আর কত হাত, কত চোখ, কত মুখ— উন্মুখ। 


খাপ বসেছে ঘুমের নৈরাজ্যে। ঘুমের গুড়ি গুড়ি বীচিগুলান কেমন আমাছামা লাগে... কেমন ব্ল্যার... কীসব টক্সিসিটি, এক সময় নিন্দালু হই। 


দণ্ডে দণ্ডে আইসে যায়। 

ডাংঘড়ির কাটা যেন।

বলে—

পাগলাগারদে কবে যাবি?


Tuesday, January 2, 2024

আলিপুরদুয়ার জেলা বইমেলা

আলিপুরদুয়ার জেলা বইমেলা



আলিপুরদুয়ার বইমেলা 


অনেকদিন ধরে বইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ নেই বললেই চলে। নতুন কেনাকাটাও তাই বন্ধ। পকেটও ফাঁকা। লেখালেখিও একপ্রকার বন্ধ। যদিও এখনও বাঁচাটা কবিতাতেই, অন্তত মাথায় তার উপস্থিতি সদা টাটকা।... যথারীতি বইমেলাগুলো হচ্ছে। এবারে জেলা বইমেলা আবার ফালাকাটাতেই, সে একটা আনন্দের ব্যাপার। আজকে তার শুরু। তাই কাজ থেকে ফেরার পথে একবার ঢুঁ মারা আটকানো গেল না। ঘুরে নিলাম চট করে স্টলগুলো। হ্যানোত্যানোর স্টল বাদ দিলে বইয়ের স্টল সাকুল্যে ওই ১৫-২০, তার মধ্যে কলিকাতার ভালো প্রকাশনী মাত্র পাঁচটা— দে'জ, পারুল, সোপান, প্রগ্রেসিভ, শিশু সাহিত্য সংসদ। উত্তরের ভালো প্রকাশনী মাত্র দুটি— বিয়ন্ড হরাইজান ও পুলি (শহরতলি, শাঙ্খিক, ডুয়ার্স... এদের থাকাটা দরকার ছিল)। হ্যাঁ একটা লিটল ম্যাগাজিন স্টল ছিল। সব মিলিয়ে খুব একটা আশাব্যঞ্জক আয়োজন বলা যায় না। তবু মন্দের ভালো, অন্য কিছু নয় একটা বইমেলা তো, তাও আবার জেলা বইমেলা। এটুকুও কম পাওয়া নয়।


নেবার মতন বই নেই নেই করে হয়তো তাও কয়েকটা হয়েই যাবে কিন্তু লোভ সংবরণ করেছি। মাত্র একটা বই, প্রবন্ধের, 'প্রান্ত বাংলার হাটের ইতিবৃত্ত' (জেলা আলিপুরদুয়ার) নিয়ে বাড়ি ফিরেছি প্রথম দিন, অন্যদিন দেখা যাক কী হয়। প্রকাশক বিয়ন্ড হরাইজন।  


—রাহেবুল